মহেশ্বরের নাম কেন নীলকণ্ঠ? এবং শিবলিঙ্গে দুধ ঢালার কারণ ব্যাখ্যা করা হল।
একবার দেবতা ও অসুরদের মধ্যে যুদ্ধের সময় দেবতারা অমৃত পানের জন্য সমুদ্র মন্থন করেন । সমুদ্র মন্থনের সময় এক পর্যায়ে সমুদ্র থেকে হলাহল নামক মারাত্নক বিষ উন্থিত হয়েছিল। যেটার চারদিকে ছড়িয়ে পড়া ও বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সকল জীবের জীবন বিপন্নকরার ক্ষমতা ছিল অত্যাধিক। শিব সকল দেবতাদের অনুরোধে এই বিষ থেকে সবাইকে রক্ষা করার ঐশ্বরিক দায়িত্ব নেন । এরপর দায়িত্ব সম্পন্নের জন্যই তিনি সমস্ত বিষ পান করেন এবং কন্ঠে তা সংরক্ষন করে রেখে দেন, আর সে জন্যই শিবের আরেক নাম নীলকন্ঠ। হলাহল বিষের বিষাক্ততার মাত্রা ছিল প্রচন্ড রকমের বেশি, যদিও শিবের উপর কোন প্রভাব ফেলে নাই । কিন্তু হলাহল বিষের তাপমাত্রার প্রভাব প্রশমিত করার জন্য দেবতারা শিবের জন্যগঙ্গা অভিষেক করেন। আর এই গঙ্গা অভিষেকের মাধ্যমে দেবতারা শিবকে প্রসন্ন করেছিলেন । শিবের সেই গঙ্গা অভিষেকে শুধুমাত্র সাপেরা এগিয়ে এসেছিল এই ঐশ্বরিক কারণ সমর্পনের জন্য । তারা নিজেরাও বিষের কিছু অংশ পান করে ও তাদের বিষ দাঁতে কিছু বিষ গ্রহণ করে । সে জন্যই সেদিন থেকেই কিছু সাপ বেশি বিষাক্ত হয়ে ওঠে। সমুদ্র মন্থনের সময় যে গঙ্গা অভিষেক করা হয়েছিল, শিবের উপাসকদের দ্বারা শিবলিঙ্গে দুধ ঢালার কারণ হচ্ছে -শিবের প্রতি ভক্তদের ভক্তি প্রতিভাস করার জন্য । শিবের পূজায় শিবলিঙ্গে দুধ ঢালা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ অভিষেক ছাড়া শিবের পূজা অসস্পূর্ণ । অভিষেকের সময় এই দুধ ঢালা খুবই পবিত্র । কারণ অভিষেকের দ্বারাই শিবের প্রতি ভক্তদের গভীর অনুরক্তি প্রকাশিত হয়। এখানে অনেকে বলে থাকে, শিবলিঙ্গে দুধ ঢেলে দুধ অপচয় করা হচ্ছে, যদিও এটা মোটেই সঠিক নয় । কারণ এই দুধের বেশ খানিকটাঅংশ চরণামৃত বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয় এবং পূজা শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ আকারে বিতরণ করা হয়। তাই দুধ ঢালা কোনো ক্রমেই অপচয় নয় বরং এটা নিষ্কলুষ ভক্তির বহিঃ প্রকাশমাত্র।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন